থ্রি ডে'জ অফ হ্যাপিনেস বইয়ের সংক্ষিপ্ত কাহিনি

থ্রি ডে'জ অফ হ্যাপিনেস বইটা শুধু একটা বই না৷ 
বইয়ের থেকেও অনেক বেশি কিছু মনে হয়েছে এটাকে৷ 


কাহিনি খুবই সংক্ষিপ্ত৷ দিনের পর দিন নিজের আত্মা, শরীরকে কষ্ট দিতে দিতে অবশেষে ভেংগে পড়া নায়ক "কুসুনোকি" জীবনের প্রতি আকাঙ্ক্ষা হারিয়ে ফেলে৷ সে আমাদের মতো নিতান্তই সাধারণ মানুষদের একজন৷ হয়তো আমাদের অনেকের পাশে প্রিয় সংগী থাকে, বাবা মা থাকে--যাদের কারণে আমাদের এরকম অবস্থায় দাড়াতে হয় না৷ কুসুনোকি ছিল সম্পূর্ণ একা একটা মানুষ৷ তাই এরকম অবস্থা তাকে বরণ করতে হয়েছে৷ আচমকা সে একটা দোকানের খোজ পায়, যেখানে নিজের জীবনের আয়ু বিক্রি করে টাকা পাওয়া যায়৷ 

কুসুনোকি সেখানে গিয়েছিল৷ বিক্রিও করেছিল কিছু আয়ু...

কতখানি আয়ু? 

সবটুকু৷ 

এরপর?  

এরপরে তার সাথে কী হয়েছে, গল্প কোনদিকে মোড় নিয়েছে জানতে চান? জানতে চাইলে আফসার ব্রাদারর্স থেকে প্রকাশিত থ্রি ডে'জ অফ হ্যাপিনেস বইটার অনুবাদটা সংগ্রহ করতে পারেন! যেকোনো বুকশপে নক দিতে পারেন৷ তবে পার্সোনালি "বইনগর" আর "book street" কে সাজেস্ট করব আমি৷ 

এখন ঢোল পেটানো বন্ধ করি! 

অন্য একটা দিক নিয়ে কথা বলি৷ বইটার শেষে থাকা "লেখকের কিছু কথা" অংশটুকুতে লেখকের কিছু কথা আছে৷ আমি তার কিছু ইন্টারভিউ পড়েছি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে৷ তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল "এরকম প্লট কীভাবে পেলেন?" 

"নিজের জীবনের একটা পর্যায়ে গিয়ে এরকম একটা দোকানের জন্য হাপিত্যেশ করতে শুরু করেছিলাম, সেখান থেকে" হাসতে হাসতে জবাব দিয়্রছিলেন লেখক৷ "কারণ আমার মনে হয়, সুখী থেকে কয়েকবছর বেচে থাকা কিন্তু অসুখী অবস্থায় ১০০ বছর কাটানোর থেকেও হাজারগুনে ভালো"৷ 

লেখকের কিছু কথাতে একটা অন্যরকম সৌন্দর্যের কথা তিনি বর্ণনা করেছেন৷ যা আগে কখনো কাউকে বলতে দেখিনি৷ " জীবনের একদম শেষ পর্যায়ে এসে দুনিয়ার সবকিছুকে অন্যরকম সুন্দর লাগতে শুরু করে৷ রাস্তার ঘাসকে লাগে অচেনা, অপূর্ব৷ আকাশে উড়তে থাকা পাখিটাকে দেখে মনে হয়, আহ স্রষ্টা কতটাই না অপূর্বভাবে এই দুনিয়া গড়েছেন!" 

ঠিক ঐ মুহূর্তের সৌন্দর্যের কথাটা তিনি বইয়ে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন৷ "ভালোবাসার মূল্য" কিংবা " বেচে থাকার মূল্য" তার বইয়ে তিনি আনতে চাননা৷ কারণ সেসব সৌন্দর্যের চেয়ে তার কাছে ক্ষনিক এর এই অসামান্য অনুভূতিটাকেই বেশি ভালো লাগে৷ 

আসলে যেটা ক্ষণস্থায়ী, সেটার প্রতিই কেন জানি আমাদের ভালোবাসাটা বেশি৷ যে ফুলটা সারাবছর ফ্যটে, তার দিকে কেউ তাকায় না৷ কিন্তু যে ফুলটা দশবছরে একবার ফোটে, তাও রাতের বেলায় ফুটে দিনে ঝরে যায়--তা দেখার জন্য লোকে ভিড় করে৷ 

আমার কাছে থ্রি ডে'জ অফ হ্যাপিনেস বইটার স্বাদটা সেরকমই লেগেছে৷ সে হয়তো নেই, কিন্তু গন্ধটা রয়ে গিয়েছে মনের ভেতর৷ আমৃত্যু তা হয়তো ভুলতে পারব না৷ 
  • থ্রি ডে'জ অফ হ্যাপিনেস
  • লেখক সুগারু মিয়াকি 
  • অনুবাদক বিমুগ্ধ সরকার রক্তিম
  • আফসার ব্রাদার্স প্রকাশনা৷ 
এখন না কিনতে চাইলেও সমস্যা নেই৷ একুশে মেলায় আসুন৷ দেখা হবে। 

বইটা পড়ার আমন্ত্রন রইল!